ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

এবার ভাস্কর নভেরা আহমেদ গুগল ডুডলে

প্রকাশিত : ১০:৪২, ২৯ মার্চ ২০১৯

ভাস্কর নভেরা আহমেদের ৮০তম জন্মবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে শুক্রবার বিশেষ ডুডলে তাকে স্মরণ করছে গুগল। বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে গুগলে ঢুকলেই চোখে পড়ছে বিশেষ ডুডলটি। ডুডলে ক্লিক করলে নভেরা আহমেদকে নিয়ে গুগলে নানা অনুসন্ধানের ফল দেখাচ্ছে।

নভেরা আহমেদ ১৯৩০ সালের আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ভাস্কর্য শিল্পের অন্যতম অগ্রদূত তিনি। তিনি ভাস্কর হামিদুর রহমানের সঙ্গে জাতীয় শহীদ মিনারের প্রাথমিক নকশা প্রণয়নে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

দীর্ঘ অন্তরাল জীবনের পর ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি প্যারিসে তার রেট্রোসপেকটিভ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূত্রে নভেরার বাবা সৈয়দ আহমেদ কর্মরত ছিলেন সুন্দরবন অঞ্চলে। নভেরার জন্ম সুন্দরবনে। চাচা আদর করে নাম রাখেন নভেরা। পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামের আসকারদিঘির উত্তরপাড়া। চাকরিসূত্রে নভেরার বাবা পরে কলকাতায় ছিলেন। নভেরার শৈশব কেটেছে কলকাতায়। নভেরা কলকাতার লরেটায় স্কুলজীবন কাটিয়েছেন। স্কুলজীবনেই তিনি ভাস্কর্য গড়তেন। ১৯৪৭-এ ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারত ভাগ হয়ে যাওয়ার পর তারা পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লায় চলে আসেন।

এ সময় নভেরা কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হন। বাবার অবসরগ্রহণের পর তারা সবাই আদি নিবাস চট্টগ্রামে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

১৯৫০ সালে তিনি লন্ডনে যান। নভেরা ১৯৫১ সালে ক্যাম্বারওয়েল স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফট সেরন্যাশনাল ডিপ্লোমা ইন ডিজাইনের মডেলিং ও স্কাল্পচার কোর্সে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে নভেরা কোর্স শেষ করে ডিপ্লোমা পান।

নভেরার ভাস্কর্য তৈরির মূল প্রবণতা ছিল ‘ফিগারেটিভ এক্সপ্রেশন’ এবং প্রধান বিষয়বস্তু ছিল নারীর প্রতিমূর্তি। তথাকথিত ভাস্কর্য শিল্পে আমরা ইন্দ্রিয় সুখাবহ নারীর যে রোমান্টিসিজম দেখি, নভেরার তৈরি ভাস্কর্যগুলো এই বৈশিষ্ট্য থেকে মুক্ত এবং অনেক বেশি মেদহীন, ঋজু। তার ভাস্কর্যে মূর্ততার চেয়ে বেশি জোর দিতেন বিমূর্ত অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলতে। নভেরার ভাস্কর্যের মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে ‘চাইল্ড ফিলোসফার’, ‘মা ও শিশু’, ‘এক্সটার্মিনেটিং অ্যাঞ্জেল’, ‘পরিবার’ (১৯৫৮), ‘যুগল’ (১৯৬৯), ‘ইকারুস’ (১৯৬৯), ‘জেব্রা ক্রসিং’ (১৯৬৮) ইত্যাদি।

১৯৭৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্যারিসে নভেরার বেশ কিছু ছবি এঁকেছিলেন এবং তাঁর মৃত্যুর পর ৪৩টি চিত্রকর্মের খোঁজ মেলে। তার কাজের সবচেয়ে বড় সংগ্রহ বিদ্যমান ঢাকার শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে, এ ছাড়া প্যারিসে গ্রেগরি দ্য ব্রুহনসের স্টুডিওতে নয়টি ভাস্কর্য ও ৪৩টি চিত্রকর্ম রয়েছে।

১৯৫৮ সালে স্থপতি হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদের শিল্পকর্মের যৌথ একটি প্রদর্শনী হয় ঢাকার কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারে। এরপর তিনবার নভেরার একক শিল্পকর্মের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৪১ বছর অন্তরালের পর ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে প্যারিসে নভেরার একটি রেট্রোস্পেকটিভ প্রদর্শনী হয়।

১৯৯৭-এ বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৫ সালের ৫ মে ফ্রান্সের প্যারিসে ইন্তেকাল করেছেন তিনি।

এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি